রাজ পরিবারের সেই আত্মা ভাজন নির্বাহী প্রকৌশলী এখন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হয়ে খোদ গোপালগঞ্জে বহাল তবিয়াতে। একাধিকবার দুদকের তলব করেছেন তাকে। রয়েছে  হাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থা রিপোর্ট। তাদের উদাসীনতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে সাতক্ষীরা মহাসড়কে ৩৩ কিলোমিটার রাস্তার কিছু অংশে যানবাহন চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে অঠারমাইলের সুভাষিনি বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত সড়ক পুননির্মানে ব্যয় ধরা হয় ১৬০ কোটি টাকা। মাত্র সাড়ে চার বছর আগে ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পুণ:নির্মাণ করা হয়। মোজাহার ইন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজটি সম্পন্ন করেন। পদ্মাব্রিজ চালু হওয়ার পর সাতক্ষীরা খুলনা সড়কে যানবাহন চলাচল দ্বিগুন ভাবে বেড়ে যায়। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের বিটুমিন উঠে কিছুটা খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে। তবে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত হলেও থেমে নেই চলাচল। সড়ক বিভাগও মেরামতে প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ৬ কি:মি: সড়কে কাজের জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া জিরোপয়েন্ট থেকে কিছু অংশে ঢালাই কাজ করার জন্যও টেন্ডার হয়েছে।

সূত্রমতে, খুলনা অংশের কাজ শেষ হয় ২০২০ সালে এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার দায়ভার শেষ হয় ২০২৩ সালে। প্রকল্পের প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয় তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাসের সময়ে। তিনি এখন গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগে দায়িত্ব পালন কালে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে বরাদ্দকৃত ১৬০ কোটি টাকার মধ্য থেকে ১৩৭.৮৮ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেন ।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। খুলনার শেখ পরিবারের সাথে তার ছিল দহরম মহরম সম্পর্ক। সেই সম্পর্কে সুবাদে তিনি বদলি হয়ে গোপালগঞ্জে লর্ড স্টাইলে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হয়েই গোপালগঞ্জে রয়েছেন এখনো বহাল তবিয়তে। 

অপর দিকে পরবর্তীতে নির্বাহী প্রকৌশলী যোগদান করেন মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান মাসুদ। তিনি মাত্র তিন কিস্তিতে ২১ কোটি ২ লাখ টাকার বিল প্রদান করেন। সড়ক ও জনপদ বিভাগের খুলনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অতি ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের কিছু অংশে বৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে তবে দ্রুত সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা চলছে। 

পরবর্তীতে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর মো: আনিছুজ্জামান মাসুদ তিন কিস্তিতে মাত্র ২১ কোটি ২ লাখ টাকার বিল প্রদান করেন। খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ফরিদ উদ্দীন বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অতিভারি যানবাহন চলার কারণে সড়কের কিছু অংশে বৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হলেও তা সংস্কারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা চলছে। খুলনায় সদ্য যোগদানকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিছুজ্জামান মাসুদ বলেন, ২০২২ সালের ২৫শে জুন পদ্মাব্রিজ চালু হওয়ার পর খুলনা চুকনগর সাতক্ষীরা সড়কে যানবাহনের পরিমাণ দ্বিগুন হয়ে যায়। তাছাড়া সাতক্ষীরার ভোমরা স্থাল বন্দরের ভারী যানবাহন চলাচলও বেড়ে গেছে। এসব কারণে পুরো সড়কের তিনটি স্থান, জিরোপয়েন্ট থেকে নিজখামার, গুটুদিয়া এবং চুকনগর এলাকা মিলে' প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর ১৯ মে ৩০ কোটি টাকার একটি টেন্ডার হয়েছে। এর মাধ্যমে দুটি বাঁক সরলীকরণসহ শক্ত ঢালাইয়ের কাজ করা হবে। ফলে কাজটি শেষ হলে যানবাহন চলাচলে কোন প্রকার ভোগান্তি আর থাকবে না ।